ওয়েবসাইট তৈরির মূল উদ্দেশ্য সাধারণত ট্রাফিক বা দর্শক

ট্রাফিক জেনারেট

নিশ্চিতভাবেই ওয়েবসাইট তৈরি করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ট্রাফিক জেনারেট করা এবং এর মাধ্যমে ব্যবসার প্রচার ও বিক্রি বাড়ানো। একটি ওয়েবসাইটের কার্যকারিতা ততক্ষণ পর্যন্ত পরিপূর্ণ নয়, যতক্ষণ না সেটি দর্শকদের কাছে পৌঁছাচ্ছে। আর এখানে এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এসইওর প্রধান দুটি অংশ—অন পেজ এসইও এবং অফ পেজ এসইও—প্রতিটি ওয়েবসাইটের গঠন এবং প্রসারের ক্ষেত্রে আলাদা আলাদাভাবে অবদান রাখে। এই ব্লগে আমরা বিস্তারিতভাবে অন পেজ ও অফ পেজ এসইওর পার্থক্য এবং উপায়গুলো আলোচনা করবো।

অন পেজ এসইও

অন পেজ এসইও হলো ওয়েবসাইটের অভ্যন্তরীণ কাজ, অর্থাৎ ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট এবং প্রযুক্তিগত গঠনকে ব্যবহারকারীর জন্য সহজলভ্য এবং সার্চ ইঞ্জিনের জন্য উপযুক্ত করে তোলা। মূলত অন পেজ এসইও’র মাধ্যমে ওয়েবসাইটের অভ্যন্তরীণ গঠন ও বৈশিষ্ট্যগুলি কাস্টমাইজ করা হয়, যাতে সার্চ ইঞ্জিন এবং ভিজিটরদের জন্য এটি সহজে বোঝা যায়। এটি বিভিন্ন উপায়ে করা হয়ে থাকে, যার মধ্যে রয়েছে:

ইউ.আর.এল সেট-আপ: সঠিক ইউ.আর.এল গঠন সাইটের সার্চ ইঞ্জিন র‌্যাঙ্কিং উন্নত করতে সাহায্য করে। মেইন কিওয়ার্ডটি ইউ.আর.এল-এ রাখা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, যদি আর্টিকেলের কিওয়ার্ড হয় "perfect article," তাহলে ইউ.আর.এল হবে http://www.example.com/perfect-article-how-to-write/

মেটা টাইটেল: এটি একটি ওয়েবপেজের টপিককে সংক্ষেপে উপস্থাপন করে এবং এইচ১ ট্যাগে সেট করা হয়। টাইটেলের মধ্যে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড রাখা উচিত, যা সার্চ রেজাল্টে র‌্যাংকিংয়ে সহায়তা করে।

মেটা ডেসক্রিপশন: মেটা ডেসক্রিপশন হলো সার্চ ইঞ্জিনে টাইটেলের নিচে প্রদর্শিত একটি ছোট বিবরণ। এটি ১৬০ ক্যারেক্টারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে এবং এর মধ্যে কিওয়ার্ড রাখা উচিত।

ইমেজ অপ্টিমাইজেশন: ওয়েবপেজে ব্যবহৃত ইমেজের জন্য Alt Tag ব্যবহার করা উচিত, যাতে সার্চ ইঞ্জিনগুলো ইমেজের বিষয়বস্তু বুঝতে পারে। ইমেজের আকার ছোট রাখা, সাধারণত ১০০ কেবি-এর নিচে, ওয়েবপেজের লোডিং স্পিড বাড়াতে সাহায্য করে।

ইন্টারনাল লিংকিং: ইন্টারনাল লিংক হলো একই ওয়েবসাইটের অন্য আর্টিকেলের লিংক ব্যবহার। এটি ওয়েবসাইটে দর্শকদের সময় বাড়ায় এবং তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পেতে সহায়তা করে।

এক্সটার্নাল লিংকিং: এক্সটার্নাল লিংক হলো ওয়েবসাইটের বাইরে অন্য ওয়েবসাইটের লিংক শেয়ার করা। এটি ট্রাস্ট বাড়াতে এবং সার্চ ইঞ্জিন র‌্যাঙ্কিং উন্নত করতে সহায়ক।

সাইট স্পিড: ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড এসইওর গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। ওয়েবসাইটের স্পিড ভালো না হলে ইউজাররা অন্য সাইটে চলে যেতে পারে।

অফ পেজ এসইও

অফ পেজ এসইও হলো ওয়েবসাইটের বাইরের প্রচারমূলক কাজ। ওয়েবসাইটের পাবলিসিটি এবং ট্রাফিক আনতে এটি ভূমিকা রাখে। এ ধরনের প্রচারণার মাধ্যমে ওয়েবসাইটের প্রচার বাড়ে এবং দর্শকদের কাছে সহজেই পৌঁছানো যায়। কিছু প্রধান অফ পেজ এসইও কৌশল হলো:

ব্লগ কমেন্টিং: অন্য প্রাসঙ্গিক ব্লগে লিংক শেয়ার করে ট্রাফিক তৈরি করা। এটি লিংক বিল্ডিং এর সহজ একটি উপায়।

গেস্ট পোস্টিং: অন্যদের ওয়েবসাইটে নিজের কন্টেন্ট শেয়ার করা এবং সেখানে নিজের সাইটের লিংক যোগ করা। এটি কেবল ট্রাফিক আনতে সহায়ক নয়, বরং ব্র্যান্ড প্রোমোশনেও সহায়ক।

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টিং: সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে পোস্ট শেয়ার করা। এতে সহজেই নতুন ভিজিটর আকৃষ্ট করা যায়।

সোশ্যাল বুকমার্কিং: ওয়েবসাইটের লিংকগুলো বিভিন্ন সোশ্যাল বুকমার্কিং সাইটে সেভ করা। এতে সহজেই ট্রাফিক এবং ব্যাকলিংক তৈরি হয়।

আর্টিকেল সাবমিশন: বিভিন্ন আর্টিকেল ডিরেক্টরিতে কন্টেন্ট সাবমিট করা, যা ট্রাফিক এবং ব্যাকলিংক পেতে সাহায্য করে।

ইনফোগ্রাফিক্স সাবমিশন: প্রাসঙ্গিক ইনফোগ্রাফিক্স তৈরি করে বিভিন্ন সাইটে শেয়ার করা। এতে দর্শকদের আকর্ষণ করা সহজ হয়।

অন পেজ এবং অফ পেজ এসইও দুটির সমন্বয়ে ওয়েবসাইটের কার্যকারিতা ও জনপ্রিয়তা বাড়ানো সম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন দক্ষ একটি এসইও এক্সপার্ট যারা সার্চ ইঞ্জিনের নিয়মগুলো মাথায় রেখে এসইও অপটিমাইজেশন করতে সক্ষম। আশা করি, এই ব্লগের মাধ্যমে আপনি এসইও সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন।

Previous Post Next Post