মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং কাকে বলে?



মার্কেটিং কি? মার্কেটিং হল সেই প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কোম্পানিগুলি পণ্য বা সেবা ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস, প্রচার, এবং বিক্রয়ের মাধ্যমে গ্রাহকদের বৃষ্টির আকর্ষণ করে। মূলত মার্কেটিং হল এক প্রকারের ব্যবস্থাপনা যা গ্রাহকদের সেবা প্রদান এবং চাহিদা পূরণের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যা গ্রাহক এবং কোম্পানির মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে পণ্য বা সেবা অফার করার মাধ্যমে। মার্কেটিং এর মূল লক্ষ্য হল গ্রাহকদের আকর্ষণ করা,গ্রাহক ধরে রাখা এবং তাদের সন্তুষ্ট করা। মার্কেটিং এর  মধ্যে বিজ্ঞাপন, বাজার গবেষণা, জনসংযোগ, এবং বিক্রয় কৌশল, ইমোশনাল মার্কেটিং ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

ডিজিটাল মার্কেটিং কাকে বলে?

ডিজিটাল মার্কেটিং হল এমন একটি মার্কেটিং কৌশল যা ইন্টারনেট এবং অনলাইন ভিত্তিক ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে পণ্য বা সেবার প্রচার করা। এটি বিভিন্ন ডিজিটাল চ্যানেলের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য ব্যবহৃত হয়, যেমন: সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (SEO), কনটেন্ট মার্কেটিং,সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং, পে-পার-ক্লিক (PPC), অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং,ভাইরাল এবং ট্রেন্ডিং মার্কেটিং ইত্যাদি। 

ডিজিটাল মার্কেটিং-এর মূল উদ্দেশ্য হল ডিজিটাল ডিজিটাল সোশ্যাল মিডিয়া বা ইন্টারনেট /অনলাইন এর মাধ্যমে একটি ব্র্যান্ড বা পণ্যকে প্রচার করে আরও বেশি গ্রাহক আকর্ষণ করা এবং বিক্রি বৃদ্ধি করা। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে একটি কোম্পানি বা সংস্থা তাদের মার্কেটিং ব্যয় কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়। ডিজিটাল মার্কেটিং দ্রুত পরিবর্তনশীল এবং ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলে, যা বর্তমান যুগে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। 

মার্কেটিং এর ইতিহাস?

মার্কেটিং বিষয়টি নতুন ধারণা নয়, মার্কেটিং এর ইতিহাস দীর্ঘ এবং বিবর্তিত। মার্কেটিং এর জনক জনক হিসাবে করপোরেট জগতে ড. ফিলিপকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। কারণ তিনি সর্ব প্রথম মার্কেটিং এর নীতি এবং মার্কেটিং ব্যবস্থাপনার উপর বই লিখেন। তিনি মার্কেটিং বিষয়টা কে কর্পোরেট শিল্পে রূপান্তরিত করেছেন, তাই  তাকে মার্কেটিং এর জনক বলা হয়। কাল ক্রমে মার্কেটিং বিভিন্ন পর্যায়ক্রমে আধুনিক রূপ নিয়েছে। বিষয়টি আপনাদের বোঝানোর স্বার্থে নীচে মার্কেটিং এর ইতিহাসের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হল:

প্রাচীন এবং মধ্যযুগীয় সময় এর মার্কেটিং   

প্রাচীন সভ্যতায় মার্কেটিং:

একটা সময় প্রাচীনকালে বাণিজ্য এবং বিনিময় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পণ্য এবং সেবা আদান-প্রদান করা হতো। তখনকার যুগে এটি ছিল একপ্রকারের সরাসরি মার্কেটিং, যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে  ক্রেতা ও বিক্রেতা সরাসরি যোগাযোগ করতেন এবং তাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য, সেবা আদান প্রদান করতেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যাক: একজনের কাছে একটা স্বর্ণের বার রয়েছে এবং অপর জনের কাছে এক বিঘা জমি রয়েছে এখন যার স্বর্ণের বার রয়েছে তার জমির প্রয়োজন এবং যার জমি রয়েছে তার স্বর্ণের বার প্রয়োজন, তারা একে অপরের মাঝে বিনিময় গ্রহণ করে সম্পত্তি আদান প্রদান করলেন এ প্রক্রিয়াটি ছিল প্রাচীন যুগের মার্কেটিং কৌশল।

মধ্যযুগের মার্কেটিং :

মার্কেটিং ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে মধ্যযুগের মার্কেটিং এ। মধ্যযুগে এসে মানুষ নিজেদের পণ্য বা সেবা ক্রয় বিক্রয় করা শিক্ষা লাভ করে। নিজেদের মাঝে ক্রয় বিক্রয় করার জন্য বাজার ব্যবস্থা চালু হয়। মধ্যযুগে বাজার এবং মেলা ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে, যেখানে ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য বিক্রি করতেন। বিজ্ঞাপনের সূচনা তখন থেকেই শুরু হয়েছিল, যেমন দোকানের সামনে সাইনবোর্ড লাগানো, নাচ গান নৃত্যের মাধ্যমে কাস্টমারের দৃষ্টি আকর্ষণ। এ বিষয়গুলো মার্কেটিং ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক ভূমিকা রাখে।

শিল্প বিপ্লব এবং উনিশ শতকের মার্কেটিং প্রক্রিয়া 

শিল্প বিপ্লব (১৮শতক – ১৯শতক) এর মার্কেটিং কৌশল:

18 থেকে 19 শতকের মধ্যে শিল্প বিপ্লবের ফলে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং পণ্য সহজলভ্য হয়। যে বিষয়টি ছিল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে এক যুগান্ত পরিবর্তনশীল প্রক্রিয়া। শিল্প বিপ্লবের ফলে বৃহত্তর বাজারের প্রয়োজন সৃষ্টি সৃষ্টি হয়। শিল্প বিপ্লবের  সময় বিজ্ঞাপন এবং ব্র্যান্ডিং এর গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। তখন ব্যবসায়ীদের মাঝে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পায়, যার ফলস্বরূপ মার্কেটিং করা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উনিশ শতকের মার্কেটিং:

উনিশ শতকে এসে প্রথম আধুনিক বিজ্ঞাপনের এজেন্সিগুলির অস্তিত্ব সৃষ্টি হয়। উনিশ শতকে প্রিন্ট মিডিয়া এবং সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনের প্রচলন বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। তখনকার যুগে জেমস ওয়াটসন এর প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি N.W. Ayer & Son মার্কেটিং এজেন্সি হিসাবে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। ধারণা করা হয় এটি সর্বপ্রথম সফল মার্কেটিং এজেন্সি। 

বিশ শতকের মার্কেটিং

১৯২০-১৯৩০: উনিশ শতকের শুরুর দিকে যখন রেডিও আবিষ্কার হয় তখন রেডিওতে বিজ্ঞাপনের প্রচলন শুরু হয়।যেহেতু তখনকার যুগের মানুষ সকলে খবরা খবর পাওয়ার জন্য রেডিও ব্যবহার করতেন তাই এটি নতুন মাধ্যম হিসাবে খুব জনপ্রিয়তা লাভ করে।

১৯৫০-১৯৬০ সময়কালে মার্কেটিং :

উনিশ শতকের মধ্য সময়ে টেলিভিশন আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে টেলিভিশন বিজ্ঞাপনের প্রধান মাধ্যম হয়ে ওঠে। যেহেতু টেলিভিশনের মাধ্যমে ভিডিও প্রদর্শন করা সম্ভব হয়েছিল এই সময়ে ডিজিটাল মার্কেটিং কনসেপ্ট এবং ডিজিটাল মার্কেটিং সেগমেন্টেশন এর ধারণা জনপ্রিয়তা লাভ করে। 

১৯৭০-১৯৮০ সময়কালের মার্কেটিং:

১৯৭০ থেকে ১৯৮০ প্রতিযোগী ব্যবসায়ী মনোভাব সৃষ্টি হওয়ায় বাজার গবেষণা এবং গ্রাহক আচরণ বিশ্লেষণের প্রাধান্য বৃদ্ধি পায়। তখনকার সময় কালে  বিজ্ঞাপনে সৃজনশীলতা এবং মনস্তাত্ত্বিক কৌশল ব্যবহার শুরু হয়।

১৯৯০ সালে ইন্টারনেট মার্কেটিং :

৯০ দশকের শেষের দিকে ইন্টারনেট আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে মার্কেটিং এর পুরো চিত্র পাল্টে যায়। ইন্টারনেটের আবির্ভাব মার্কেটিং এ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে, যেটা ছিল মানুষের কল্পনার বাহিরে, শুরু হয় ডিজিটাল মার্কেটিং এর চূড়ান্ত রূপ। গুগল মার্কেটিং, ইন্টারনেট মার্কেটিং,ইমেইল মার্কেটিং এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পণ্য প্রচার শুরু হয়। দিন দিন প্রতিনিয়ত নতুন নতুন মার্কেটিং কৌশল বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করে।

২১শতকের বর্তমান যুগের মার্কেটিং 

২০০০-বর্তমানের মার্কেটিং:

ডিজিটাল মার্কেটিং এর যুগ। সোশ্যাল মিডিয়া, সার্চ ইঞ্জিন, এবং মোবাইল প্ল্যাটফর্ম মার্কেটিং এর মূল মাধ্যম হয়ে ওঠে। ডাটা অ্যানালিটিক্স এবং কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট (CRM) এর গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়, মার্কেটিং এর নতুন নতুন সফটওয়্যার আবিষ্কার হয়।

সেরা কয়েকটি ডিজিটাল মার্কেটিং মেথড: 

Search Engine Optimization- সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশান 

বর্তমানে তথ্য খোঁজার জন্য গুগল হলো সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় মাধ্যম। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) মাধ্যমে ওয়েবসাইট বা ওয়েব সাইটে থাকা কনটেন্ট গুলোকে সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্ট পেজে (SERP) গুগলের প্রথম পেইজে আনার জন্য অপটিমাইজ করা হয়। SEO এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটের অর্গানিক ট্রাফিক বৃদ্ধি করা হয়। SEO এর মূল লক্ষ্য হল ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য আরো অপটিমাইজ এবং আকর্ষণীয় করে তোলা, যাতে সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহারকারীরা সহজেই যেকোনো প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পেতে পারে।

Search Engine Marketing- সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM) হল ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা, কোন পণ্য বা সেবার প্রচার এবং বিক্রয়ের জন্য সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে পেইড বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে গুগলের প্রথম পেইজে অ্যাড শো করা হয়। SEM এর মাধ্যমে দ্রুত এবং কার্যকরভাবে নিজের ব্যবসাকে বৃদ্ধি করা যায় তবে এর জন্য সার্চ ইঞ্জিন কে অর্থ প্রদান করতে হয়। SEM এর প্রধান উপাদান হল পেইড সার্চ বিজ্ঞাপন, যা পে-পার-ক্লিক (PPC) মডেল ব্যবহার করে। প্রতি ক্লিকের জন্য অর্থ প্রদান করতে হয় যেটাকে বলা হয় পেইড মার্কেটিং।

Social Media Marketing-সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (SMM) হল ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি প্রধান অংশ, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলির মাধ্যমে পণ্য বা সেবা প্রচার করার জন্য মার্কেটিং করা হয়। মূলত সোশ্যাল মিডিয়ার উপর ভিত্তি করেই ডিজিটাল মার্কেটিং সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে। SMM এর মাধ্যমে ব্র্যান্ড সচেতনতা বৃদ্ধি, ওয়েবসাইট ট্রাফিক বৃদ্ধি, এবং বিক্রয় বৃদ্ধির করার জন্য কার্যকরী কৌশল প্রয়োগ করা হয়।

Affiliate Marketing- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল একটি পারফরম্যান্স-ভিত্তিক মার্কেটিং মডেল, যেখানে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান (অ্যাফিলিয়েট) কমিশনের বিনিময়ে অন্য কোনো কোম্পানির পণ্য বা সেবা প্রচার করে। যারা এফিলিয়েট মার্কেটিং করে তারা তাদের নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম বা চ্যানেলের মাধ্যমে এই পণ্য বা সেবা প্রচার করে, যদি কোন ভিজিটর তাদের দেওয়া লিঙ্ক থেকে কোন পণ্য বা সার্ভিস গ্রহণ করে তখন তারা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন পায়।

Content Marketing – কন্টেন্ট মার্কেটিং মার্কেটিং

বর্তমান সময়ে কন্টেন্ট ইজ কিং, কনটেন্ট এর মাধ্যমে সহজে কারও দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়, প্রাসঙ্গিক এবং ধারাবাহিক কন্টেন্ট তৈরি করে নির্দিষ্ট লক্ষ্য গ্রাহকদের আকর্ষণ এবং পণ্য, সেবা সেল করা হয়। এর মূল লক্ষ্য হল গ্রাহকদের সমস্যার সমাধান করা, তাদের তথ্য প্রদান করা, এবং সময়ের সাথে সাথে বিশ্বাস এবং আনুগত্য তৈরি করা, যেন সাধারণ ভিজিটদের মাঝে পণ্যবা সেবা সেল করা যায়।

Email Marketing- ইমেইল  মার্কেটিং

ইমেইল মার্কেটিং হল একটি মেসেঞ্জার মার্কেটিং পদ্ধতি, যা সম্ভাব্য এবং বিদ্যমান গ্রাহকদের ইমেইল মাধ্যমে প্রাসঙ্গিক তথ্য, প্রস্তাবনা, এবং প্রচারণা পাঠানোর মাধ্যমে ব্যবসার প্রচার করা হয় এবং গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে পণ্য বা সার্ভিস সেল করা। এটি এক ধরনের ডিজিটাল মার্কেটিং, ছোট বড় সকল বিজনেস গ্রো করার জন্য এবং সেল জেনারেট করার জন্য  ইমেইল মার্কেটিং খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

Display Advertising- বিজ্ঞাপন প্রদর্শন

বিজ্ঞাপন প্রদর্শন মার্কেটিং (Display Advertising) হল একটি ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল, যেখানে গ্রাফিকাল বিজ্ঞাপনগুলি ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা হয়। এই বিজ্ঞাপনগুলি সাধারণত ব্যানার, ভিডিও, এবং ইন্টারেক্টিভ ফর্ম্যাটে ব্যবহৃত হয়ে থাকে এবং একটি নির্দিষ্ট গ্রাহকের কাছে পণ্য বা সেবা পৌঁছানোর জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়।

Viral & Trending Marketing,- ভাইরাল এবং ট্রেন্ডিং মার্কেটিং

ভাইরাল এবং ট্রেন্ডিং মার্কেটিং বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ দুটি ধারণা।ছোট বড় সকল ব্যবসা প্রচার করার জন্য ব্যবসায়ীরা ব্র্যান্ড, পণ্য, বা সেবার পরিচিতি বাড়ানোর পাশাপাশি বিক্রয় ও লাভ বৃদ্ধিতে এই কৌশলটি ব্যবহার করে। ভাইরাল মার্কেটিং একটি কৌশল যেখানে কনটেন্ট (ভিডিও, ছবি, পোস্ট ইত্যাদি) দ্রুত এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। ট্রেন্ডিং মারকেটিং এর মাধ্যমে কনটেন্টটি বড় পরিসরে মানুষের কাছে পৌঁছায়, যেন তা স্বাভাবিকভাবে এক ব্যবহারকারীর থেকে আরেক ব্যবহারকারীর কাছে ছড়িয়ে যায়। এবং ব্যবসায়ীরা ফ্রিতে মার্কেটিং করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করে। মানুষের আবেগকে জাগ্রত করে এমন কনটেন্ট দ্রুত ভাইরাল হয়। অনন্য ও সৃজনশীল কনটেন্ট ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

ইমোশনাল মার্কেটিং

ইমোশনাল মার্কেটিং হল একটি বিপণন কৌশল যেখানে গ্রাহকদের আবেগকে ব্যবহার করে ব্র্যান্ড, পণ্য, বা সেবার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করা হয়। এই কৌশলটি গ্রাহকদের মনে একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে, যা তাদের ক্রয় সিদ্ধান্তে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। আপনি যদি কোন পণ্য বা সার্ভিস সেল করেন আর সেখানে যদি আবেগ জুড়ে দিতে পারেন তাহলে আপনার পণ্য বা সার্ভিস এর অটোমেটিক মার্কেটিং করে দিবে সাধারণ জনগণ এটাই মূলত ইমোশনাল মার্কেটিং এর স্ট্যাটাজি।

AI মার্কেটিং : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), মেশিন লার্নিং, এবং বড় ডাটার ব্যবহার মার্কেটিং কে আরও প্রভাবশালী এবং কার্যকরী করে তুলেছে বিশেষ করে মার্কেটিং সেক্টরে। ইন্টারেক্টিভ এবং পার্সোনালাইজড মার্কেটিং কৌশলগুলি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর ইতিহাস একটি ধারাবাহিক পরিবর্তন এবং ডিজিটাল মার্কেটিং কে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে। সময়ের সাথে সাথে প্রযুক্তি, সমাজ এবং গ্রাহকের প্রয়োজন অনুযায়ী AI মার্কেটিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে AI ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং প্রযুক্তি মার্কেটিং এর মূল স্তম্ভ হয়ে উঠেছে।

ক্যারিয়ার হিসেবে কেমন হবে? ডিজিটাল মার্কটিং কিভাবে শিখবেন?

দিন দিন ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার হিসেবে সম্ভাবনা ও সুযোগ  সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং দ্রুত বর্ধমান ক্যারিয়ার ক্ষেত্র। প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে ব্যবসা এবং প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের পণ্য ও সেবা প্রচারের জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের উপর নির্ভর করছে।  এই কারণে ডিজিটাল মার্কেটিং পেশাদারদের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ারের সুযোগসমূহ

আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং ভালোভাবে শিখতে পারেন তাহলে আপনার ক্যারিয়ার অপরচুনিটি অভাব হবে না। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে বিভিন্ন ধরনের ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ রয়েছে, যেমন: 

  • SEO (Search Engine Optimization) বিশেষজ্ঞ,
  • SEM (Search Engine Marketing) বিশেষজ্ঞ,
  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ম্যানেজার
  • কনটেন্ট মার্কেটার
  • ইমেইল মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ
  • ওয়েব অ্যানালিটিক্স বিশেষজ্ঞ

দ্রুত বৃদ্ধি ও উন্নতি: ডিজিটাল মার্কেটিং পেশায় দ্রুত উন্নতির সুযোগ থাকে। আপনি যদি একজন সৃজনশীল ব্যক্তি হয়ে থাকেন তাহলে সৃজনশীলতা এবং নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের ক্ষমতা আপনার দ্রুত পদোন্নতির সম্ভাবনা বেশি।

বৈশ্বিক সুযোগ: বর্তমানে ঘরে বসেই ডিজিটাল মার্কেটিং বিশ্বব্যাপী কাজ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। আপনি যেকোনো স্থান থেকে কাজ করতে পারেন, যা ফ্রিল্যান্সিং এবং রিমোট কাজের সুবিধা দেয়। মূলত ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কোন স্কিল থাকতে হয় আর ডিজিটাল মার্কেটিং হল একটা স্কিল যার মাধ্যমে আপনি ঘরে বসেই ফ্রিল্যান্সিং সেবা অফার করতে পারেন।

উচ্চ বেতন: যেহেতু ছোট বড় সকল কোম্পানির ডিজিটাল মার্কেটের প্রয়োজন হয় তাই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের পেশাদারদের বেতন সাধারণত ভালো হয়, বিশেষ করে অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা বাড়ার সাথে সাথে দ্রুত আপনার সেলারি বৃদ্ধি পাবে।

কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন

বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং শিক্ষা গ্রহণের বিভিন্ন মাধ্যম রয়েছে । নিচে কয়েকটি প্রধান উপায় আলোচনা করা হলো:

অনলাইন কোর্স:

Coursera: Coursera হল অনলাইনে সবচেয়ে বড় স্কিল লার্নিং প্ল্যাটফর্ম, গুগলের ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স এবং অন্যান্য প্রোগ্রাম Coursera থেকে শিখতে পারেন।

Udemy: Udemy মাধ্যমে আপনি যেকোন স্কিল সহজে ঘরে বসে শিখতে পারেন, Udemy তে বিভিন্ন স্তরের ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স রয়েছে।

LinkedIn Learning: আপনি যদি ফ্রিতে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে চান LinkedIn Learning আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, নানা বিষয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স রয়েছে যেগুলো আপনি শিখতে পারবেন।

প্রাকটিস ও প্রজেক্ট: 

নিজস্ব ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে SEO, কনটেন্ট মার্কেটিং এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং প্রয়োগ করার মাধ্যমে দ্রুত ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে পারেন। তাচার ফ্রিল্যান্স কাজের মাধ্যমে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন। বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং একটি সম্ভাবনাময় এবং দ্রুত বর্ধমান ক্যারিয়ার ক্ষেত্র। এটি শেখার জন্য প্রচুর সুযোগ রয়েছে। সঠিক প্রশিক্ষণ এবং প্র্যাকটিসের মাধ্যমে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে সফল ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারেন। দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা বাড়ানোর সাথে সাথে আপনি এই ক্ষেত্রের বিভিন্ন সুযোগের সুবিধা নিতে পারবেন।

Previous Post Next Post